আসন্ন একলাম্পশিয়ার (Impending Eclampsia) কবল থেকে মুক্তি এবং একসাথে ২ সন্তানের (১ মেয়ে o১ ছেলে ) মা হলেন লোপা পোদ্দার :

আসন্ন  একলাম্পশিয়ার (Impending  Eclampsia)  কবল  থেকে মুক্তি   এবং একসাথে  ২ সন্তানের (১ মেয়ে  o১ ছেলে ) মা  হলেন  লোপা  পোদ্দার :

আসন্ন  একলাম্পশিয়ার (Impending  Eclampsia)  কবল  থেকে মুক্তি   এবং একসাথে  ২ সন্তানের (১ মেয়ে  o১ ছেলে ) মা  হলেন  লোপা  পোদ্দার :

আনুমানিক  ৭ মাস  আগে লোপা  পোদ্দার  নামে  এক গর্ভবতী  তাঁর    হাজবেন্ড  সহ  আমার  চেম্বারে   উদ্বিগ্ন হয়ে  প্রবেশ  করলেন ।

তাঁদের  স্তব্ধতা ভাঙ্গানোর  জন্য হাঁসি  মুখে  কথা  বললাম এবং  ইচ্ছামতো  কাহিনী  বলার  অভয়  দিলাম ।

লোপা  ইতস্ততঃ করতেই  থাকলো ; তাঁর হাজবেন্ড তাঁদের  পূর্ববর্তী  গর্ভের  শুরু  ও

 শেষের  দুর্দশাপুর্ন  কাহিনী  বলার  পর  বললেন  নিরাপদ  সন্তান  প্রসবের  আশায়  তাঁরা  এসেছেন । সেদিন  তাঁরা জানতেন  না  গর্ভে  জমজ  সন্তান  রয়েছে ।

USG এ  সনাক্ত  হলো   গর্ভস্থ  সন্তান  জমজ -ছবিতে  দেখলাম ;দুজনেই  চোখ  ফিরিয়ে  নিয়া  ভয় বিজড়িত কন্ঠে  বলে  উঠলো  আমাদের  ভাগ্য খারাপ । বহু  কথার  বিনিময়ে  তাঁদের  স্বাভাবিক  করলাম  আল্লাহর  কৃপায়  ।

লোপা  নিয়মিত  গর্ভকালীন  চেক -আপ  এ  স্বামীসহ  আসতেন কিন্তু  স্বামীর  ভয়ে আধো  আধো  কথা  বলতেন ।

প্রতাপশালী  ভদ্রলোক  প্রতিবারই  আমাকে  স্মরন  করাতেন  নিরাপদ  ডেলিভারির  কথা ।

 ২৪ সপ্তাহে হটাৎ  করে  লোপার  প্রেসার  বেড়ে  গেলো ; হাজবেন্ড  অখুশি  হলেন  ও  লোপা  চিন্তিত হলেন । আমি  প্রেসার  কন্ট্রোলের  মেডিসিন  দিলাম  এবং  প্রেসার  চার্ট  রক্ষা  করতে  বললাম ।

ভদ্রলোক  নিজেই  প্রেসার  দেখতেন এবং  সার্চ করে ও  আগের  প্রেসক্রিপশন এবং ডাক্তার  বন্ধুর  সাহায্য   নিয়া  বৌকে  মেডিসিন  খাওয়াতেন ।

সঠিক  চিকিৎসার  জন্য  তাঁকে  কাউন্সিলিং  করে  ব্যর্থ হলে তাঁর  ডাক্তার  বন্ধুর  সাথে  কথা  বললাম  ও তাকে  বড় হাসপাতালে  চিকিৎসাধিন  থাকার  পরামর্শ দিলাম । নাছোড়বান্দা  নাকোচ  করে  দিয়া  আমার  কাছে  এসে  প্যাচাল  পাড়তেই  থাকলো ।

এদিকে  লোপার  ওজন  ও প্রসার  ধুম  করে  বেড়েই  চললো .প্রস্রাবে  প্রোটিন  এর  পরিমান ও  বাড়তে  থাকলো ।

৩ পদের দিনে -রাতে  মোট  ১৪  টি  প্রেসার  কন্ট্রোল  ঔষধ  সেবনের  পরও  লোপার  প্রেসার   নিয়ন্ত্রনে  না  আসলে  BSMMU বা  ঢাকা  মেডিকেল  কলেজ  হাসপাতালে   ভর্তি  হতে  বললেও বিভিন্ন  অজুহাত  দেখালেন ।

 ৯ নভেম্বর  ২০১৮  – লোপা  আসন্ন  একলাম্পশিয়ার  সম্মুখীন হলে ৩৪ সপ্তাহ  ৪ দিনে   ধানমন্ডির  ল্যাব  এইড  হাসপাতালে

জরুরি   ভিত্তিতে বাধ্য  হয়ে   সিজার  করেছিলাম  ভয়ংকর  একলাম্পশিয়ার  ছোবল  ঠেকায়ে  মা – বাচ্চাদের  সুস্থ্য  রাখার  প্রায়াশে ।

উল্লেখ্য  বাচ্চাদের  অবস্থাও  খুব  খারাপ  ছিলো ।

 এখন লোপার  প্রেসার  কন্ট্রোলে এবং  বাচ্চা  দুটি  NICU  ভর্তি  ছিল ; কোন  incubator  এ রাখা  লাগে  নাই  ।

 বাচ্চা  দুটির  ওজন  যথাক্রমে  ১৭০০ ও  ১৬০০ গ্রাম ;তারাও  আল্লাহর  অশেষ  কৃপায়  ভালো  আছে ।

২  মাস  পর  বাচ্চা  ২ টোর  ওজন  বৃদ্ধি  পেয়ে  যথাক্রমে  ৩ কেজি  ৩০০ গ্রাম  ও ৩ কেজি  তে  উন্নীত  হয়েছে । আলহামদুলি্লাহ ।

ডাঃ নুরজাহান বেগম

সহযোগী অধ্যাপক (বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন)

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়