গর্ভাবস্থায় প্রচন্ড বমি (Hyperemesis Graviderum) নিয়ন্ত্রনযোগ্য এবং সুস্থ্য বাচ্চা প্রসব সম্ভব

গর্ভাবস্থায় প্রচন্ড বমি (Hyperemesis Graviderum) নিয়ন্ত্রনযোগ্য এবং সুস্থ্য বাচ্চা প্রসব সম্ভব

হাlইপারইমেসিস গ্রাভিডেরাম (Hyperemesis Graviderum) গর্ভাবস্থায় একটি খুব বড় সমস্যা — এটা মর্নিং সিকনেস (Morning Sikness) নয় ।

হাইপারইমেসিস গ্রাভিডেরাম হলে গর্ভবতী খাবার পেটে রাখতে পারেন না .অনবরত বমি করেন . খেতেও পারেন না . অত্যন্ত .ক্লান্তি বোধ করেন .শরীরের ওজন ৫% কমে যায় ; চলাচল করতে পারেনা. অত্যধিক পানি শূন্যতায় এবং শরীরে লবনের (Electrolyte)ভারসাম্যহীনতাই রুগীর মরণাপন্ন অবস্থা হয় এবং রুগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করতে হয় নিবিড় পর্যবেক্ষনে রেখে ।

সাধারনতঃ ২০ বছরের কম বয়সে গর্ভবতী হলে এ সমস্যা হয় । নিজের একবার হলে বার বার হতে পারে । মা – বোনেরও একই ইতিহাস থাকতে পারে । অতিরিক্ত মেদযুক্ত / কম ওজনের নারীরা এই সমস্যা নিয়া আসেন ।

রুগী বিষন্ন থাকে .অরুচিতে ভুগেন .শরীরের গভীর শিরায় রক্ত জমাট বাধে (Deep Vein Thrombosis)- যা ভীষন বিপদজনক ।

মিসেস সিমু বয়স ২০ . পর পর ২ বার এই( হাইপারইমেসিস গ্রাভিডেরাম) ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখিন হন । বাবা ক্যান্সারের রুগী ; আর্থিক অবস্থা ভালো না ;চিকিৎসার টাকার সংকুলান করতে না পারায় এবং সিমুর অবস্থা মরণাপন্ন হলে পারিবারিক সিদ্ধান্তে তাঁর প্রথম বাচ্চা গর্ভপাত করা হয় ।

দ্বিতীয়বার হাইপারইমেসিস গ্রাভিডেরাম এ ভুগলে তাঁর বাবা ও মা আবারও বাচ্চা নস্ট করার প্রস্তাব দেন । আমি তাঁদের ভালো করে কাউন্সিলিং করে কম খরচে সিমুর চিকিৎসার ও ডেলিভারি করার দ্বায়িত্ব নিই ।

আল্লাহর অশেষ কৃপায় .সিমুর গর্ভকালীন সময় ঠিকঠাক ছিলো । ফলতঃ ১১ জানুয়ারি তিনি পুত্র সন্তানের মা হলেন । তাঁদের পরিবারে আনন্দের বন্যা চলমান ; মনে হচ্ছে এই শিশুটি বসন্তের আবাহনী বার্তা নিয়া এলো ।

বিপদে পাজেল না হয়ে ধৈর্য্য ধারন করা ইসলাম সম্মত । গর্ভপাত করা থেকে বিরত থাকা আমাদের জীবনের প্রত্যয়ে হোক । আমিন ।

ডাঃ নুরজাহান বেগম

সহযোগী অধ্যাপক (বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন)

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়