মেয়েদের ডিম্বানু কমে যাওয়ার কারনে বন্ধ্যাত্ব ও প্রেগনেন্সি নেওয়ার উপায় সমূহ :

মেয়েদের  ডিম্বানু  কমে যাওয়ার  কারনে  বন্ধ্যাত্ব  ও প্রেগনেন্সি  নেওয়ার  উপায় সমূহ :

টেস্টিস/অন্ডকোষ (ছেলেদের   প্রজনন  গ্রন্থি )ও ডিম্বাশয় /ওভারি (মেয়েদের          প্রজনন গ্রন্থি ) থেকে  যথাক্রমে  উৎপন্য  হয়  শুক্রানু এবং  ডিম্বানু   যে  ২ টি  কোষ   মিলিত  হয়ে  ভ্রুন  তৈরি  হয়  ।  সুতরাং .বাচ্চা  হওয়ার    জন্য  ছেলেদের  অপরিহার্য  কোষ -শুক্রানু  ) . পক্ষান্তরে .  ডিম্বানুই  হচ্ছে  বাচ্চা  হওয়ার  জন্যই মেয়েদের  প্রজনন  কোষ  । উক্ত  কোষ  ২ টির  সংখ্যা .গঠনগত এবং  মানগত  ত্রুটির  ফলে  বন্ধ্যত্ব  হয় । অথচ  ঊনবিংশ  শতাব্দীতেও  মহিলাদেরই   এককভাবে দায়ী  করা  হয়  বন্ধ্যত্বের  জন্য ।

বয়স  বৃদ্ধির সাথে  সাথে   প্রাকৃতিক নিয়মে  শুক্রানু  ও  ডিম্বানুর  সংখ্যা  কমতে  শুরু  হয় ;মেয়েদের  ৩৬  বছর  এবং  ছেলেদের  ৫১ বছর  থেকে  প্রজনন  কোষ  হ্রাস পেতে  শুরু  করে । বিশেষ  করে  ডিম্বানু আগের  মতো  আকারে  বাড়ে  না এবং  গুনগত  মানও  কমে  যায় ;ফলতঃ  সহজে  প্রেগনেন্সি আসে  না ।

 আজ  আমরা  জানবো .মেয়েদের  ডিম  হ্রাস  এর  কারন  .লক্ষন .নির্নয়  ও প্রেগন্যান্ট  হওয়ার  চিকিৎসা  সম্বন্ধে –

প্রতিটি  গর্ভস্থ  মেয়ে  বাচ্চার   গর্ভাশয়ে  নির্দিষ্ট  সংখ্যক  ডিম  তৈরি  হয় ও জরায়ুতে  থাকা  অবস্থায়  কিছু  প্রাকৃতিক  নিয়মে  নস্ট   হয়  এবং  জন্ম  নেই  নির্ধারিত  সংখ্যক   ডিম  নিয়া ।     পিরিয়ড  শুরু  হলে ঐ  মজুদ  ডিমের  সংখ্যা  কমতে  থাকে ;  কারন প্রজননকালে   হরমোনের  প্রভাবে  ঐ  নির্দিষ্ট সংখ্যক  ডিম  থেকে    বেশ   কিছু  ডিম  বড়  হতে  শুরু  করে  ও  প্রতিমাসে  ১ টি  মাত্র  ডিম  পূর্নতা  প্রাপ্ত  হয়  যেকোন  ১ টি  ওভারিতে  এবং  মাসিকের  ১৪ দিন আগে  ডিম্বাশয়  থেকে মুক্ত  হয়ে ।  -এ  পদ্ধতিকে  ওভুলেশোন বলে  ।   বাকি  বড়  হতে  শুর করা  ডিমগুলো  নস্ট  হয়  বলে   ডিমের  মজুদ  প্রতিমাসে  কমতে  থাকে -এটা  স্বাভাবিক  প্রক্রিয়া ।

 উক্ত  প্রক্রিয়া  ছাড়াও  কিছু  কিছু  মহিলার  ডিম  ৩৫ বছরের  আগেই এমনকি  ২৪ বছরে

 কমে  যায় ;অল্প  বয়সে  ডিম  কমে  যাওয়া  কে  বলে  পোর  ওভারিয়ান  রিজার্ভ (POR)/Diminished Ovarian Reserve (DOR).

রোগী  ডিম  কমে  যাওয়া  বুঝবেন  কি করে :

?

 রুগী  নিজে  বুঝেন  না ;তাঁরা  বন্ধ্যাত্ব  বা  পিরিওডের  অসুবিধা  নিয়া  ডাক্তারের  শরনাপন্ন  হন। ডাক্তার  ইতিহাস  নিয়া এবং  কিছু  পরীক্ষা  করে  বুঝেন  ডিম  কম ।

কিছু  উপসর্গ  এর  কথা  রোগী  থেকে  পাওয়া  যায় –

*  ঘন  ঘন  বা  দেরি  করে  পিরিওড  হওয়া

* পিরিয়ডের রক্তের  পরিমান  একেবারে  কম

* বন্ধ্যত্ব

* ত্বক  খসখসে  হওয়া

*সেক্স  কমে  যাওয়া

* অত্যধিক  দুর্বলতা  অনুভব

* বিমর্ষ

কারনসমূহ :

পুস্টিহিনতা

 ভেজাল  খাবার

ধূমপান (tamaj) মদপান .মাদকদ্রব্য  দিয়া নেশা

অতি  পরিশ্রম

chemo / রেডিও  থেরাপি

ওভারির অপারেশন

.এন্ডোমেট্রিওসিস

পেল্ভীক  ইনফেকশন

chromosomal  abnormality

৭০-৮০ ভাগ ক্ষেতে   কোন কারন পাওয়া  যায়না

অটোইম্মুউন – ওভারির  কাজের  বিরুদ্ধতা  করা ।

 নির্নয়ের  টেস্ট –

রক্তের  -AMH level

রক্তের – FSH

AFC   -মাসিকের  দ্বিতীয়  দিনে  (usg ) করে  ডিমের  ঘর  গননা ।

চিকিৎসা :

* জীবনযাত্রা  ঠিক  করা

* ডিম বৃদ্ধিকরার  মেডিসিন(DHEA)  সেবন – এই  মেডিসিন  এর  সুফল  নিয়া  গবেষনা  চলছে  আমিও  করেছি -সামান্য  কিছু  মহিলা  গর্ভধারণ  করেছেন ।

* ডিম্বাশয়  উদ্দীপ্ত  করা ।

*IUI

* IVF

 করা ।

নিজের  ডিমে  গর্ভ  না  আসলে  ডোনার/ অন্য  মহিলার  ডিম (Donor  Egg) নিয়া  IVF করা ।  ডোনার  ডিম  ইসলাম  সমর্থন  করে  না ।

ডাঃ নুরজাহান বেগম

সহযোগী অধ্যাপক (বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন)

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়